গৃহকে মনোরম ও আকর্ষণীয় করার কাজটি শিল্পের একটি ক্ষেত্র। শিল্প হচ্ছে যেকোনো ধরনের প্রচেষ্টা বা অনুভূতি যা মানুষকে আনন্দ দেয়। এই প্রচেষ্টা কোনো কিছু সৃষ্টির মধ্য দিয়ে হতে পারে, আবার আচরণের মধ্যে দিয়েও হতে পারে। মানুষের কল্যাণের জন্য সুন্দর উদ্দেশ্য নিয়ে শিল্পের সৃষ্টি হয়। গৃহকে সাজানোর কাজটি যখন এসব উদ্দেশ্য পূরণ করে তখন সেটা শিল্পের মর্যাদা পায়। এখন প্রশ্ন হলো, গৃহকে আমরা আকর্ষণীয় করব কীভাবে? এর জন্য গৃহ পরিবেশের পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি প্রয়োজন উপযুক্তভাবে গৃহকে সাজানো। এটি অভ্যন্তরীণ গৃহসজ্জা (Interior Decoration) নামে পরিচিত। গৃহকে মনোরম ও আকর্ষনীয় করে তুলতে হলে, যে বিষয়গুলো শেখা দরকার তা এই অধ্যায়ে ধারাবাহিকভাবে উপস্থাপন করা হলো-
# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন
যেকোনো উৎসবে তানিশা তার গৃহকে ফুল দিয়ে সাজাতে পছন্দ করে। এছাড়া তিনি গৃহকে আকর্ষণীয় করতে বিভিন্ন দেয়ালচিত্র ব্যবহার করেন।
রং (Colour) আমাদের চারপাশে নানা ধরনের রঙের ব্যবহার দেখা যায়। রং দেখার জন্য আলোর প্রয়োজন হয়। রংকে প্রধানত তিনভাগে ভাগ করা হয়।
| ১. প্রাথমিক রং (Primary Colour)- যে রং অন্য কোনো কোনো রং থেকে তৈরি করা যায় না, সেগুলোই প্রাথমিক রং। লাল, নীল, হলুদ হলো প্রাথমিক রং। | ![]() |
| ২. মাধ্যমিক রং (Secondary Colour)- একই পরিমাণ দুটি প্রাথমিক রং মেশানো হলে যে রঙের সৃষ্টি তাই মাধ্যমিক রং। মাধ্যমিক রংগুলো হলো- ⅰ) লাল + হলুদ = কমলা ii) হলুদ নীল সবুজ iii) নীল + লাল = বেগুনি | ![]() |
৩. সংমিশ্রিত রং (Tertiary Colour)- সমান পরিমাণ একটি প্রাথমিক রং এবং একটি মাধ্যমিক ,রঙের মিশ্রণে সংমিশ্রিত রং তৈরি করা যায়।
i) লাল+কমলা = লালচে কমলা
ii) কমলা হলুদ হলদে কমলা
iii) হলুদ + সবুজ হলদে সবুজ
iv) সবুজ + নীল = নীলচে সবুজ
v) নীল + বেগুনি = নীলচে বেগুনি
vi) বেগুনি + লাল লালচে বেগুনি

বর্ণচক্র ১২টি রং চক্রাকারে সাজিয়ে বর্ণচক্র তৈরি করা হয়। বর্ণচক্র দিয়ে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, সংমিশ্রিত রঙের বৈশিষ্ট্য স্পষ্ট বোঝা যায়। এ থেকে খুব সহজেই গৃহের আসবাবপত্রের রং, গৃহসজ্জার অন্যান্য উপকরণর রং নির্বাচন করা যায়।
রঙের বিভিন্ন প্রভাব- একেক ধরনের রং আমাদের মনে একেক ধরনের অনুভূতি জাগায়।
উষ্ণ রং - বর্ণচক্রের উজ্জ্বল রংগুলোকে গরম বা উষ্ণ রং বলা হয়। যেমন-লাল, হলুদ, কমলা।
- উষ্ণ রঙের ব্যবহার পরিবেশে গরম ভাব আনে।
- উষ্ণ রং দৃষ্টির সামনের বস্তুকে কাছে নিয়ে আসে।
- উষ্ণ বা উজ্জ্বল রঙের ব্যবহারে ঘরের আকৃতি ছোট মনে হয়।
শীতল রং- বর্ণচক্রের হালকা রংগুলোকে ঠান্ডা বা শীতল রং বলা হয়। যেমন- নীল, নীলচে সবুজ, সবুজ।
- শীতল রঙের ব্যবহার ঠান্ডা, শান্ত, স্নিগ্ধ পরিবেশের অনুভূতি দেয়।
- শীতল রং দৃষ্টির সামনের বস্তুকে দূরে নিয়ে যায়।
- শীতল বা হালকা রঙের ব্যবহারে ঘরকে বড় দেখায়।
গৃহসজ্জাকে আকর্ষণীয় করতে খুব সতর্কতা ও যত্নের সাথে রং নির্বাচনের প্রয়োজন হয়।
| কাজ ১- তোমরা হাতেকলমে রং মিশিয়ে বর্ণচক্রের জন্য রং তৈরি করো এবং বর্ণচক্র আঁকো। |
রেখা, আকার ও জমিন
রেখা (Line)
রেখা একটি অন্যতম শিল্প উপাদান। কোনো গতিশীল বিন্দুকে রেখা বলা হয়। রেখা সরু ও মোটা হতে পারে, আবার যেকোনো দৈর্ঘ্যের হতে পারে।

উপরের ছবিগুলোতে বিভিন্ন রকম রেখা দিয়ে নকশা তৈরি করা হয়েছে। এই নকশাগুলো কি তোমার কাছে একইরকম আবেদন সৃষ্টি করছে? এই নকশাগুলো প্রতিটিই পৃথক পৃথক ভাব উপস্থাপন করছে। আঁকাবাঁকা রেখা দিয়ে নকশাটিতে নতুনত্ব সৃষ্টি করা হয়েছে। লম্ব রেখা আপাত দৃষ্টিতে উচ্চতাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে। আড়াআড়ি রেখা দিয়ে জায়গাটিকে আরও প্রশস্ত বা মোটা মনে হচ্ছে। কৌণিক রেখায় নকশাটির অতিরিক্ত সৌন্দর্য ও নতুনত্ব ফুটে উঠেছে। জিগজ্যাগ রেখা অন্যান্য রেখার চেয়ে বেশি গতিশীল ও বৈচিত্র্য আনতে সক্ষম। গৃহকে আকর্ষণীয় করে সাজাতে রেখার এসব বৈশিষ্ট্য জানা অত্যন্ত জরুরি।
আকার (Form)
কোনো কিছুর সামগ্রিক গঠনকে আকার বলে। আকার যদি ঠিক না থাকে তবে পুরো শিল্পটিই দেখতে অসুন্দর হয়ে যায়। দুই ধরনের আকার আছে। যথা:
১) মুক্ত আকার- জ্যামিতিক আকার ছাড়া সব ধরনের আকার মুক্ত আকার। যেমন- গাছের আকার, ফুলের আকার।
২) জ্যামিতিক আকার- বৃত্ত, চর্তুভুজ, ত্রিভুজ, আয়তক্ষেত্র ইত্যাদি।

কোনো বস্তুকে কাজের উপযোগী করে তোলার জন্য আকার তৈরির প্রয়োজন হয়। যেমন-কাঠকে কেটে জোড়া দিয়ে বসার জন্য চেয়ারের আকার ও কাঠামো তৈরি হয়। বস্তু যদি সঠিক আকারের হয়, তবে তা দিয়ে কাজ করা সহজ হয়। যেমন-চেয়ারের আকার ঠিক না হলে বসে আরাম পাওয়া যায় না। বিভিন্ন আকার ব্যবহার করে নকশায় বৈচিত্র্য সৃষ্টি করা যায়। যেমন- খাবার টেবিলের আকার কখনো চারকোনা, কখনো গোল, আবার কখনো ডিম্বাকৃতি হয়ে থাকে। অভ্যন্তরীণ গৃহসজ্জায় পরিবারের সদস্যদের প্রয়োজন ও রুচি অনুযায়ী বিভিন্ন নকশার আকার নির্বাচন করা হয়।
| কাজ ১- বিভিন্ন ধরনের রেখা ব্যবহার করে পাঁচটি নকশা আঁকো। কাজ ২- জ্যামিতিক আকার ও মুক্ত আকার দিয়ে দুটি নকশা আঁকো। |
জমিন (Texture)
সকল বস্তুর উপরিভাগের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য থাকে। যেমন- মাটির দেয়াল, টাইলস-এর মেঝে, আসবাবপত্র ও কার্পেটের উপরিভাগ। এদের মধ্যে কোনোটি খসখসে, কোনোটি চকচকে মসৃণ, আবার কোনোটি উঁচু নিচু হয়ে থাকে। বস্তুর উপরিভাগের বৈশিষ্ট্যই জমিন। চোখে দেখে এবং স্পর্শ করে জমিনের বৈশিষ্ট্য বোঝা যায়। জমিন শিল্প সৃষ্টির অন্যতম একটি উপাদান। গরম ও ঠান্ডা পরিবেশ সৃষ্টির জন্য জমিন বড় ভূমিকা পালন করে। যেমন- ভারী ও মোটা জমিনের পর্দা ও কার্পেট শীতকালে ঘরকে গরম রাখে। আবার গ্রীষ্মে হালকা ও পাতলা জমিনের পর্দা ঘরে ঠান্ডার অনুভূতি দেয়। বিভিন্ন ঘরে খোদাই বা নকশা করা আসবাবপত্র বা উঁচু ও নিচু জমিনের গৃহসজ্জার উপকরণ গৃহকে যেমন- আকর্ষণীয় করতে পারে, আবার চকচকে মসৃণ জমিনের মেঝে, জানালার কাচ, পর্দার কাপড় দিয়েও গৃহের অভ্যন্তরীণ সজ্জার সৌন্দর্যকে অনেকগুণ বাড়ানো যায়।

বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের জমিন
| কাজ ৩- পাঁচ ধরনের উপকরণের নাম লেখো যাদের জমিন আলাদা। |
একটি চেয়ার তৈরি করার কথা চিন্তা করা যাক। চেয়ারের পায়ের উচ্চতা যদি ৪৬ সেন্টিমিটার হয় তবে হেলান দেওয়ার অংশ কতটুকু উঁচু হলে বসতে আরাম হবে ও দেখতে সুন্দর লাগবে? চেয়ারের হাতলের নকশার সাথে কি পায়ের নকশার মিল থাকবে? মধ্যবিন্দু থেকে দুই হাতলের দূরত্ব সমান হতে হবে। চেয়ারটিতে কি এমন নকশা দেওয়া যায় যে সবার দৃষ্টি প্রথমে সেখানে যাবে? একই রকমের ছয়টি চেয়ার ব্যবহারে খাবার ঘরের সৌন্দর্য কতটুকু বাড়বে?
এসব মাথায় রেখে যদি কোনো সামগ্রী তৈরি হয় তবে অবশ্যই তা দেখতে আকর্ষণীয় হবে এবং নির্দিষ্ট প্রয়োজন মেটাবে। চেয়ারটি তৈরি করতে যেসব বিষয় লক্ষ করার কথা ভাবা হয়েছে সেগুলো যেকোনো শিল্প সৃষ্টিতেই প্রয়োজন। তাই এভাবে বলা যায়, শিল্প সৃষ্টির জন্য যে নীতিগুলো অনুসরণ করার দরকার হয় সেগুলোই শিল্পনীতি।
শিল্পনীতিগুলো হলো- ক) সমানুপাত (Proportion) খ) ভারসাম্য (Balance) গ) মিল (Harmony) ঘ) ছন্দ (Rythm) ও ৬) প্রাধান্য (Emphasis)
ক) সমানুপাত-সৃষ্টিকে আকর্ষণীয় ও মজবুত করার জন্য এই নীতি অনুসরণ করা হয়। একটি অংশের সাথে আরেকটি অংশের আকার আকৃতি ও অনুপাতের সামঞ্জস্য থাকাই সমানুপাত। এটি অনুধাবনের ব্যাপার। তখন কোনো কিছু আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়, যখন কোনো বৈশিষ্ট্যের আধিক্য থাকে না আবার স্বল্পতাও থাকে না, তখনই অনুপাত ঠিক আছে বলা হয়।

খ) ভারসাম্য-স্কুলে খেলার মাঠে বা পার্কে আমরা ঢেঁকিতে চড়ে খেলি। বসার পর ঢেঁকির দুদিকে যদি সমান ওজন না হয় তাহলে ঢেঁকি খেলা সম্ভব হয় না। আবার একদিকে বেশি ভারী হলে অন্যদিকে হাল্কা ওজনের দুজন বসেও খেলাটা চালিয়ে নেওয়া যায়। এটিই ভারসাম্যের নীতি। কোনো মধ্যবিন্দুর উভয় দিকে সমান দূরত্বে একই আকার আয়তনের বস্তু স্থাপন করে ভারসাম্য রাখা হয়।

গ) মিল-কোনো ঘরে প্রবেশ করলে যখন দেয়াল থেকে শুরু করে মেঝে, আসবাবপত্র, পর্দা, আলো ইত্যাদি সবকিছুর মধ্যে একটা সম্পর্ক ফুটে ওঠে, দেখতে কোনো রকম অসমন্বয় লাগে না, তখন বুঝতে হবে ঘর সাজানোতে মিল রাখা হয়েছে। এটা হতে পারে একটি জিনিসের বিভিন্ন অংশের মিল। আবার জিনিসটির সাথে অন্যান্য সকল উপকরণের মিল।

ঘ) ছন্দ-এটি একটি আকর্ষণীয় গতিশীল অবস্থা। কোনো শিল্প দেখার সময় চোখ কোনো কিছুতে যেন বাধাপ্রাপ্ত না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখা দরকার। কোনো কিছু পুনরাবৃত্তি করার মাধ্যমে ছন্দের সৃষ্টি হয়। শিল্পকে প্রাণবন্ত ও চলমান করতে ছন্দের দরকার হয়।

ঙ) প্রাধান্য-শিল্প তৈরির সময় কোনো একটি অংশকে অন্য অংশের তুলনায় বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। এটা এমনভাবে তৈরি হয় যেন একটি বিশেষ অংশের উপর আগে দৃষ্টি পড়ে। যেমন ঘরে ঢুকলে কোথাও ফুল সাজানো থাকলে সেটা আগে চোখে পড়ে। আবার ফুল সাজানোর সময় ছোট ছোট ফুলের সাথে বড় একটি গাঢ় রঙের ফুল দিয়েও প্রাধান্য সৃষ্টি করা যায়।

সৃজনশীল চিন্তাধারার কলাকৌশলপূর্ণ প্রকাশ হলো শিল্প। শিল্প মানুষকে আনন্দ দেয়, আকর্ষণ করে। শিল্প সৃষ্টির দক্ষতা একটি বিরাট সম্পদ যা আমাদের প্রত্যেকের মাঝে সুপ্ত অবস্থায় থাকে। সঠিক উপায় না জানার কারণে অনেক সময় তা কাজে লাগানো যায় না। সঠিক উপায় জেনে, মনের সৃজনশীল চিন্তাধারা কাজে লাগিয়ে যে কেউ কোনো কাজকে সুন্দর ও আনন্দদায়ক করতে পারে। তবেই শিল্প সৃষ্টির উদ্দেশ্য সার্থকতা লাভ করে।
| কাজ ১- পাঁচটি শিল্প অনুসরণ করে পাঁচ ধরনের ছবি আঁকো। শিল্পনীতি অনুসারে ছবিগুলোর ক্যাপশন লেখো। |
গৃহে আমরা নানা ধরনের আসবাবপত্র ব্যবহার করি। খুব প্রয়োজনীয় কিছু আসবাব যা প্রায় সব বাড়িতেই থাকে সেগুলো হলো খাট, আলমারি, টেবিল, চেয়ার, সোফা, আলনা, ড্রেসিং টেবিল ইত্যাদি। গৃহের আসবাব যথাস্থানে সংস্থাপনের উপর গৃহ পরিবেশের আরাম ও সৌন্দর্য অনেকখানি নির্ভর করে।
আসবাবপত্র যথাস্থানে সংস্থাপন করা হলে আমাদের কাজ করা সহজ হয়। সময় ও শক্তির অপচয় হয় না, শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি কম হয়।
এসো আমরা জেনে নেই আসবাবপত্র যথাস্থানে সংস্থাপনের জন্য কী কী বিষয় লক্ষ রাখতে হয়-
- প্রয়োজনের চেয়ে বেশি আসবাব কক্ষের সৌন্দর্যকে নষ্ট করে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত আসবাব হাঁটাচলায় অসুবিধা সৃষ্টি করে। ঘরে আলো ও বাতাস প্রবেশে বাধা দেয়, ঘরে খালি জায়গা কম থাকে এবং ঘরটিকে ছিমছাম মনে হয় না। এজন্যে আসবাব ক্রয়ে বা সংস্থাপনের আগে প্রয়োজনের কথা বিবেচনা করা উচিত।
- প্রতিটি কক্ষের কাজ অনুযায়ী আসবাবপত্র সাজাতে হয়। বসার ঘরে অতিথিদের জন্য বসার সোফা, চেয়ার থাকা জরুরি। সেভাবে শোবার ঘরে খাট, আলমারি, খাবার ঘরে ডাইনিং টেবিল, চেয়ার সংস্থাপন করতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় কাজের অসুবিধা করে দেখতে ভালো লাগবে চিন্তা করে আসবাব সাজানো হয়েছে। আসবাবের এরকম ত্রুটিপূর্ণ বিন্যাসে সময় ও শক্তি বেশি খরচ হয়। যেমন- পড়ার টেবিলের অনেক দূরে বইয়ের তাক।
- আসবাবপত্র এমনভাবে সাজাতে হবে যেন চলাচলে অসুবিধা না হয়। আসবাবের কোনায় ধাক্কা লাগা, পায়ে হোঁচট খাওয়া ইত্যাদি বিষয় গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে। বিশেষ করে পরিবারে শিশু, বয়স্ক ব্যক্তিদের হাঁটাচলার সুবিধা দেখতে হবে।
- যে কাজের জন্য আসবাবটি সাজানো হচ্ছে সে কাজটি যেন আরামদায়কভাবে সম্পন্ন করা যায়। উজ্জ্বল আলোর নিচে পড়ার টেবিল ও রান্নার স্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। পড়ার টেবিল এমন জায়গায় থাকবে যেন যথেষ্ট আলো ও বাতাস পাওয়া যায়। কাজের স্থানে উপযুক্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা থাকলে কাজের ইচ্ছা ও মনোযোগ বাড়ায়।
- বড় আকারের আসবাব সংস্থাপনের জন্য বড় দেয়াল প্রয়োজন। যেমন- বড় দেয়ালের সামনে আলমারি রাখতে হয়। প্রত্যেক আসবাবের সামনে ব্যবহারের সুবিধার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা রাখলে ভালো হয়। দরজা, জানালা খোলার সুবিধার দিকে লক্ষ রেখে আসবাব সংস্থাপন করা প্রয়োজন।
- আসবাব সংস্থাপনে শিল্পনীতি অনুসরণ করতে হবে। আসবাবের আকার আকৃতির সাথে কক্ষের আকার আকৃতির সম্পর্ক অত্যন্ত বেশি। ছোট ঘরে অতিরিক্ত আসবাব ঘরের সৌন্দর্য নষ্ট করে।
- জায়গার অভাবে বর্তমানে বহুমুখী আসবাব ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে। একটি বহুমুখী আসবাব দিয়ে একাধিক প্রয়োজন মেটানো যায়। যেমন- সোফার পেছনের অংশ সমান করে খাট এবং নিচে ভেতরের অংশ সংরক্ষণ একক হিসেবে ব্যবহার করা যায়। চিত্রে সোফার ছবি দেখানো আছে। যেহেতু বাসগৃহে জায়গার অভাব দিন দিন বেড়েই চলেছে তাই আসবাব সংস্থাপনে জায়গার সুষ্ঠু ব্যবহারের দিকে খুব বেশি নজর দেওয়া প্রয়োজন।

বহুমুখী আসবাব দিয়ে একাধিক প্রয়োজন মেটানো যায়

| কাজ ১- আসবাব সংস্থাপনে সচরাচর যে ত্রুটিগুলো চোখে পড়ে তার তালিকা করো। কাজ ২- আসবাব সংস্থাপনে তুমি কোন কোন বিষয় বিবেচনা করবে? গুরুত্ব অনুসারে সাজাও। |
আসবাবপত্র ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের উপকরণ দিয়ে আমরা ঘর সাজিয়ে থাকি। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো দরজা ও জানালার পর্দা, কার্পেট, দেয়ালচিত্র, আলো এবং ফুলের বিন্যাস।
দরজা ও জানালার পর্দা
গৃহে দরজা ও জানালার পর্দার ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রথমত, পর্দার ব্যবহার আমাদের আব্রু রক্ষা করে। বিশেষ করে পর্দার ব্যবহারে রাতের আলোতে ঘরের ভেতরের কর্মকাণ্ড, চলাফেরা বাইরে থেকে দেখা যায় না। কড়া রোদ, বাইরের ধুলাবালি থেকে অনেক সময় ঘরকে ঢাকার প্রয়োজন হলেও পর্দা ব্যবহার করা হয়। উপযুক্ত রং, আকার, নকশার পর্দা নির্বাচন করতে পারলে ঘরের পরিবেশকে অনেক আকর্ষণীয় ও আরামদায়ক করা সম্ভব।

পর্দা নির্বাচনে লক্ষণীয় বিষয়
ঘরের দেয়াল, মেঝে, ছাদ ও আসবাবপত্রের রঙের সাথে মিল রেখে পর্দার রং নির্বাচন করতে হয়। বর্তমানে ঘরের আকার ছোট হয় বলে হাল্কা রঙের পর্দা ব্যবহারে ঘরকে বড় দেখায়। হাল্কা রঙের পর্দা বিশ্রামের ঘরগুলোতে ঠান্ডা পরিবেশ সৃষ্টি করে। বড় ছাপা, চেক, আড়াআড়ি রেখার পর্দা বড় আকারের ঘরে ব্যবহার করা যেতে পারে। ছোট আকারের ঘরে ছোট ছাপা, লম্বা রেখার পর্দা ব্যবহার করা ভালো। চেক, ছাপার পর্দা ছোট আকৃতির ঘরকে আরও ছোট করে দেয়।
পর্দার কাপড়ের জমিন হাল্কা বা ভারী উভয় ধরনের হতে পারে। এর জন্য কৃত্রিম ও প্রাকৃতিক তন্তুর কাপড় নির্বাচন করা যেতে পারে। ভারী জমিনের পর্দা শীতকালে ঘর গরম রাখে। পর্দা বিভিন্ন নকশার হয়। সজ্জামূলক নকশার পর্দা আমরা বসার ঘরে ব্যবহার করি। জানালার পর্দা অনেক সময় জানালা জুড়ে না হয়ে নিচের অর্ধেক অংশে দেওয়া হয়। এতে বেশি আলো ও বাতাস পাওয়া যায়। একই ঘরে খাবার ও বসার ব্যবস্থা পৃথক করার জন্য পর্দা দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে পাটের বিভিন্ন দড়ি, রং-বেরঙের কাপড় ঝুলিয়ে পর্দার আবহ আনা যায়।
কার্পেট
আমাদের দেশে ঘরের মেঝে বিভিন্ন ধরনের হয়। যেমন- মাটির ও সিমেন্টের মেঝে, মোজাইক মেঝে, টাইলস মেঝে, কাঠের মেঝে ইত্যাদি। বর্তমানে টাইলস মেঝে বিশেষ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বিভিন্ন রং ও নকশায় তৈরি টাইলস মেঝে ঘরের সৌন্দর্য বাড়ায়, মেঝেতে কার্পেট বিছিয়ে ঘরের পরিবেশকে আরও জাঁকজমকপূর্ণ করা যায়।
ঘরের সম্পূর্ণ মেঝেতে কার্পেট বিছানো যায়। আবার মেঝের কিছু অংশজুড়ে ছোট কার্পেট দেওয়া যেতে পারে। পুরাতন বাড়ির মেঝে কিংবা সাধারণ সিমেন্টের মেঝেতে যদি কোনো ত্রুটি থাকে তবে কার্পেট দিয়ে সেটা ঢেকে রাখা যায়। কৃত্রিম তন্তুর কার্পেট যেমন- নাইলন, পলিস্টার এর রং ও উজ্জ্বলতার স্থায়িত্ব বেশি এবং দামে সস্তা হয়। এ ধরনের কার্পেটে ধুলাবালি কম জমে, সহজে পরিষ্কার করা যায়। প্রাকৃতিক তন্তুর কার্পেট (যেমন-উল, পাট, সুতি)-এর মধ্যে উলের কার্পেটে হাঁটতে আরাম এবং শিশুর জন্য কিছুটা নিরাপদ। কার্পেট নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা প্রয়োজন। তা না হলে ধুলাবালিজনিত রোগ, যেমন- শ্বাসকষ্ট বাড়তে পারে।

দেয়ালচিত্র ও আলোক সজ্জা
দেয়ালচিত্র
কক্ষসজ্জার অন্যতম একটি উপকরণ হলো দেয়ালচিত্র। দেয়ালের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে দেয়ালে নানা ধরনের পেইন্টিং এবং ছবি ঝোলানো হয়। দেয়ালচিত্র কোথায় টাঙানো হবে তার জন্য স্থান নির্বাচন এবং উপযুক্ত ছবি নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় তবে আরও কিছু লক্ষণীয় বিষয় হলো-
- ছবির আকৃতির সাথে দেয়ালের আকৃতির সামঞ্জস্য থাকতে হবে। বড় ছবির জন্য বড় দেয়াল উপযোগী।
- ঘরের সব ছবি একই উচ্চতায় টাঙাতে হবে। এটা চোখ বরাবর হলে দেখতে সুবিধা হয়।
- একের অধিক ছবি দিয়েও বড় দেয়াল সাজানো যায়। সেক্ষেত্রে ছবির ফ্রেমের আকার এক রকম হলে ভালো হয়। তবে খুব বেশিসংখ্যক ছবি বা অনেক ছোট ছোট ছবি এক দেয়ালে ভালো দেখায় না।
- ঘরের কর্মকান্ডের সাথে মিল রেখে ছবির বিষয়বস্তু হবে। যেমন- খাবার ঘরে খাবারের ছবি উপযুক্ত।
- দেয়ালে ছবি এমনভাবে টাঙাতে হবে যাতে কোনো তার, দড়ি, সুতা দৃষ্টিগোচর না হয়।
- ছবি দেখার জন্য পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকবে।
দেয়ালচিত্র ছাড়াও হাতে তৈরি নানা ধরনের শিল্প দিয়ে দেয়াল সাজানো যায়। দেশীয় কাঁচামাল ব্যবহার করে নিজের হাতে তৈরি যেকোনো দেয়ালসজ্জা গভীর আবেদন সৃষ্টি করতে পারে। এক্ষেত্রে পাট, ঝিনুক, পাখির পালক, শুকনা ডালপাতা, ফলের বীজ, ধানের শিষ ইত্যাদি উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। আবার কাপড়, সুতা, রং, ধাতবসামগ্রী, বোতাম, শব্দ তৈরি হয় এমন বস্তু দিয়েও দেয়ালসজ্জা তৈরি করা যায়। গৃহের যেকোনো সজ্জার মধ্যে দিয়ে দেশিয় ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ফুটিয়ে তুলতে পারলে তা সবার কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য ও পছন্দের হয়।

| কাজ ১- দেশীয় উপকরণ এবং ভাববস্তু (theme) ব্যবহার করে একটি দেয়ালসজ্জা তৈরি করো। |
আলোকসজ্জা ও আলোর সুষ্ঠু ব্যবহার আলো ছাড়া আমরা চলতে পারি না। আমাদের জীবনের জন্য অপরিহার্য এই আলোর উৎস কী? সূর্য থেকে আমরা প্রাকৃতিক আলো পাই। রাতের বেলা প্রাকৃতিক আলো থাকে না। তখন কৃত্রিম আলো দিয়ে আমাদের চলতে হয়। তোমরা কি লক্ষ করেছ যে, রৌদ্রোজ্জ্বল বা মেঘলা দিনে আমাদের মন কেমন থাকে? রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে কাজ করার ইচ্ছা জাগে, আমরা বাইরে বের হই। অপরদিকে মেঘলা দিনে মনে কিছুটা বিষণ্ণতা আসে, অলসভাবে সময় কাটাতে ইচ্ছে করে। এভাবে আলো আমাদের শরীর ও মনের উপর গভীর প্রভাব ফেলে। গৃহে প্রাকৃতিক আলো আমাদের কর্মস্পৃহা বাড়ায়, উপযুক্ত আলোয় পড়াশোনায় মনোযোগ আসে, শীতকালে ঘরে আলো এলে ঘর গরম থাকে।

ঘরে প্রাকৃতিক আলো আসার ব্যবস্থা করা কাজের জন্য ভালো ও স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে উপযোগী। পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক আলো ঘরে প্রবেশের জন্য আজকাল জানালা, দরজায় গ্লাস ব্যবহার করা হচ্ছে। ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে আমাদের দেশে দক্ষিণ ও পূর্ব দিক থেকে আলোর প্রাপ্তি ও বায়ুপ্রবাহ বেশি হয়। শীতকাল ছাড়া বছরের প্রায় সব সময় দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে বায়ুপ্রবাহ হয়। তাই গৃহের দক্ষিণ ও পূর্বের জানালা খোলা রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। কখনোই আসবাবপত্র দিয়ে আলো ও বাতাস বন্ধ করা যাবে না। জানালার আকার, সংখ্যা, অবস্থান ইত্যাদির ওপর ঘরে প্রাকৃতিক আলো প্রবেশ নির্ভর করে। এছাড়া পর্দার জমিন, রং, ডিজাইন বা নক্শার উপর কক্ষের সুষ্ঠু প্রাকৃতিক আলোর প্রবেশ নির্ভর করে।
রাতে আমরা কৃত্রিম আলো ব্যবহার করি। প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে আলোর ব্যবস্থা করা হয়। যেমন-রান্নাঘরে রান্নার স্থানে, পড়ার টেবিলের উপর উজ্জ্বল আলোর দরকার। বসার ঘরে মৃদু আলো ঘরকে আকর্ষণীয় করে তোলে। শোবার ঘরের আলো স্নিগ্ধ হতে হয়। অনেক সময় কৃত্রিম আলোর বাল্বের উপর শেড ব্যবহার করা হয়। সেগুলোর রং ও নকশা নির্বাচনে যথেষ্ট সতর্ক হতে হয়। বিভিন্ন রং ও নকশার শেড ঘরের সৌন্দর্য বাড়ায়, সুরুচির পরিচয় বহন করে।
| কাজ ১- কক্ষে প্রাকৃতিক আলো প্রবেশের জন্য তুমি কী কী বিষয় লক্ষ রাখবে? তা লেখো। |
পুষ্পবিন্যাস
ফুল ভালোবাসে না এমন মানুষ কি খুঁজে পাওয়া যাবে? নিশ্চয়ই না। আমাদের পছন্দের এই ফুল ও পাতার বিন্যাস কক্ষ সজ্জার অন্যতম অংশ। ফুলদানিতে যদি ফুল ও পাতা থাকে, তবে ঘরের সৌন্দর্য শতগুণ বেড়ে যায়। বাড়িতে ফুল দিয়ে সাজানো কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন অনুষ্ঠানের মান বৃদ্ধি করে, সদস্যদের সুরুচির পরিচয় দেয়। এছাড়া গৃহসজ্জায় আমরা নানা কারণে ফুলের বিন্যাস করি-
- বিশেষ অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত ও আকর্ষণীয় করার জন্য ফুল দিয়ে ঘর সাজানো হয়। যেমন-বিয়ে, হলুদের অনুষ্ঠান, বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব ইত্যাদি।
- এটা কক্ষসজ্জায় একঘেয়েমি দূর করে।
- কম খরচে গৃহকে আকর্ষণীয় করা যায়।
- ফুল ও পাতা দিয়ে সাজানোর কারণে ঘরে কিছুটা প্রাকৃতিক পরিবেশের স্বাদ পাওয়া যায়।
- ঘরে ফুলদানিতে ফুল থাকলে সবার দৃষ্টি প্রথমেই সেদিকে যায় অর্থাৎ কক্ষসজ্জায় খুব সহজেই প্রাধান্য সৃষ্টি করা যায়।
- মনকে ভালো রাখার জন্যে আমরা ফুল সাজাই।
- বাড়িতে অতিথি এলে ফুলদানিতে ফুল সাজানো হয়।
ফুল সাজানোর জন্য বিশেষ কিছু সরঞ্জামের দরকার হয়। যেমন- ফুলদানি বা ফুল সাজানোর পাত্র, কাঁচি, পিন হোল্ডার, পানি, চিকন তার ইত্যাদি।
ফুল সাজানোর সময় প্রথমেই উদ্দেশ্যের কথা ভাবতে হয়। ভিন্ন ভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য ফুল সাজানোর পদ্ধতি আলাদা হয়ে থাকে যেমন- কোনো উৎসবে ফুল সাজানো এবং প্রতিদিনের ফুল সাজানো এক হয় না। সাধারণত প্রাচ্যরীতি এবং পাশ্চাত্যরীতি অনুসরণ করে ফুল সাজানো হয়। প্রাচ্য রীতিতে ফুল সাজানো বলতে জাপানি পদ্ধতি অনুসরণ করাকে বোঝায়। জাপানিরা ফুল সাজানোতে খুব দক্ষ। তাদের ফুল সাজাবার পদ্ধতিকে ইকেবানা (IKEBANA) বলা হয়। ইকে অর্থ তাজা, বানা অর্থ ফুলকে বোঝায়। এই রীতিতে অল্পসংখ্যক ফুলের দরকার হয়। এই পদ্ধতিতে ফুলদানিতে তিনটি প্রধান ডাল থাকে। সবচেয়ে উঁচু ডালটি হলো স্বর্গ, দ্বিতীয় উচ্চতার ডালটি মানুষ এবং ছোট ডালটি পৃথিবীর প্রতীক হিসাবে ফুল সাজানো হয়।
প্রথম ডালটির উচ্চতা ফুলদানির ব্যাস ও উচ্চতার যোগফলের সমান। দ্বিতীয় ডালটি প্রথম ডালের ৩/৪ অংশ (৪ ভাগের ৩ ভাগ)। ছোট ডালটি দ্বিতীয় ডালের ১/২ অংশ (অর্ধেক)। প্রধান ডাল তিনটি ছাড়া আশপাশের ডাল, পাতা, ফুলকে ফিলার বলা হয়। পাশ্চাত্য পদ্ধতিতে ফুল সাজানোতে অনেক ফুল ব্যবহার করা হয়। এই পদ্ধতিতে স্তূপাকারে ফুল সাজানো হয়। জাঁকজমকপূর্ণ ফুলদানিতে বিভিন্ন রঙের ফুল এক সাথে সাজানো হয়।

যে রীতিতেই আমরা ফুল সাজাই না কেন, আমাদের ফুল সাজানোর সময় কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে-
- ফুলদানির আকারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ফুল, ডাল, পাতার উচ্চতা সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখতে হবে।
- ঘরের আসবাব, পর্দা, কার্পেটের সাথে ফুলের রং যেন সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।
- কখনই তাজা ফুলের মধ্যে কৃত্রিম ফুল মেশানো উচিত না।
- পিন হোল্ডারটি যেন পানিতে ডুবে থাকে।
- শুকনা, পোকা খাওয়া পাতা, কোঁকড়ানো পাতা ও ফুল ফেলে দিতে হয়।
তাজা ফুলের পরিবর্তে কাপড়, কাগজ ও প্লাস্টিকের ফুল দিয়েও ফুলদানি সাজানো যায়। এসব ফুল দিয়ে একবার ফুলদানি সাজালে তা অনেক দিন ধরে রাখা যায়। এতে সময় ও শক্তি বাঁচে। কিন্তু এসব ফুলের আবেদন তাজা ফুলের মতো হয় না। তাজা, টাটকা ফুলের গন্ধ ও সৌন্দর্য আমাদেরকে বেশি আকৃষ্ট করে।
| কাজ ১- শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন পদ্ধতিতে ফুল সাজাও। |
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন :
১. নিচের কোনটি প্রাথমিক রং?
ক. কমলা
খ. লাল
গ. বেগুনি
ঘ. সবুজ
২. কোন রেখা অধিক বৈচিত্র্য আনতে সক্ষম?
ক. জিগজ্যাগ রেখা
খ. কৌণিক রেখা
গ. লম্ব রেখা
ঘ. বক্ররেখা
৩. কাজে মনোযোগ বৃদ্ধির জন্য গৃহে প্রয়োজন-
i. দামি আসবাবপত্র
ii. সুসজ্জিত কক্ষ
iii. উপযুক্ত আলো বাতাস
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii
খ. i ও iii
গ. ii ও iii
ঘ. i, ii ও iii
সৃজনশীল প্রশ্ন :
১. সালেহা ও হালিমা একই আয়তনের ফ্ল্যাটে থাকেন। সালেহা তাঁর বসার ঘরে আকাশি রঙের পর্দা ব্যবহার করেছেন। অন্যদিকে হালিমা তাঁর বসার ঘরে লাল রঙের ফুলের ছাপার পর্দা ব্যবহার করেছেন এবং দরজার পাশে বড় আকারের একটি মাটির টব রেখেছেন। পাশের ফ্ল্যাটের মারিয়া একদিন সালেহার বাসায় বেড়ানো শেষে হালিমার বাসায় এসে বললেন, তোমার বসার ঘরটি একটু বড় হলে ভালো হতো।
ক. আলোর উৎস কী?
খ. অভ্যন্তরীণ গৃহসজ্জা বলতে কী বোঝায়?
গ. সালেহা গৃহসজ্জায় কোনটিকে প্রাধান্য দিয়েছেন? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. গৃহসজ্জায় হালিমার পারদর্শিতা বিশ্লেষণ করো

